হোলি খেলায় নোংরামি, অসাম্প্রদায়িকতার নামে অসভ্যতা
মুস্তাফিজুর রহমান
হোলি উৎসব হিন্দুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান। অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও তা উদযাপন হয়ে আসছে নির্বিঘ্নে। কিন্তু সেই উৎসবের নামে এবার যে ভয়ঙ্কর নোংরামির চিত্র দেশবাসী দেখেছে তাতে জাতি বিষ্মিত।
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদনে দেখা যায়, পথচারীদের, বিশেষ করে নারীদের ধরে ধরে রং লাগানো হচ্ছে। প্রকাশ্য হাত দেয়া হচ্ছে নারীদের স্পর্শকাতর স্থানে।
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদনে দেখা যায়, পথচারীদের, বিশেষ করে নারীদের ধরে ধরে রং লাগানো হচ্ছে। প্রকাশ্য হাত দেয়া হচ্ছে নারীদের স্পর্শকাতর স্থানে।
একজন মুসলীম মেয়েকে চার পাঁজন যুবক ঝাপটে ধরে রং মেখে দিচ্ছে। মেয়েরা ভয়ে চিৎকার করে উঠছে।
কর্মস্থলে গমনকারী এই নারীকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত ও জোরপূর্বক রং লাগিয়ে দেয় বখাটেরা |
এক নারী তাঁর কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন, আপত্তি সত্ত্বেও কর্মজীবী ওই নারীকে জোর করে রং দেয়া হয়। সে অবস্থায় ক্ষুব্ধ নারী জানতে চান, ‘‘এখন যদি আমি চাকরি হারাই, ক্ষতিপূরণ কে দেবে?”
আরেক হিজাব পড়া ছাত্রীও প্রতিবেদককে তার বিড়ম্বনার অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছিলেন। ক্যামেরার সামনেই এক উচ্ছৃঙ্খল যুবক এসে আবার গায়ে হাত দিয়ে রং লাগিয়ে দেয়।
আরেক হিজাব পড়া ছাত্রীও প্রতিবেদককে তার বিড়ম্বনার অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছিলেন। ক্যামেরার সামনেই এক উচ্ছৃঙ্খল যুবক এসে আবার গায়ে হাত দিয়ে রং লাগিয়ে দেয়।
ইচ্ছার বিরুদ্ধে উৎসবের নামে প্রকাশ্য নারীদের গায়ে হাত দেয়া, ঝাপটে ধরা ও নিপিড়ন দেখে বিবেকবান মানুষ হতবাক।
এই নির্লজ্জ ঘটনা দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যম গুলো এড়িয়ে গেলেও ইতিমধ্যে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলেছে। প্রায় সবাই এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ঝাড়ছেন।
হিজাব পরা এই নারীকে টিভি ক্যামেরায় কথা বলার মুহুর্তে রং লাগাচ্ছে এক বখাটে |
বেসরকারী টেলিভিশনের ঐ প্রতিবেদনের কমেন্টে কাজী সম্রাট নামের একজন লিখেছেন, এ হলো নিজ সংস্কৃতি ও অস্তিত্ব বিলিয়ে দেয়ার পরিণাম।
এইচ আল বান্না নামে একজন লিখেছেন, ”আজ যদি কোন হিন্দু বোনের গায়ে গরুর রক্ত লাগানো হত, শবে বরাত কিংবা ঈদের আনন্দে তার শরীরে ঘিনঘিনে হাতগুলো ইচ্ছেমত বিচরণ করত- তবে মিডিয়ার ফেনিল চিৎকারে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়ে যেত।
এইচ আল বান্না নামে একজন লিখেছেন, ”আজ যদি কোন হিন্দু বোনের গায়ে গরুর রক্ত লাগানো হত, শবে বরাত কিংবা ঈদের আনন্দে তার শরীরে ঘিনঘিনে হাতগুলো ইচ্ছেমত বিচরণ করত- তবে মিডিয়ার ফেনিল চিৎকারে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়ে যেত।
জোরপূর্বক রং লাগানোর পর অপমান ও ক্ষোভে কান্নারত দুই বোন |
জাকির হোসেন নামে একজন লিখেছেন, এটি অসাম্প্রদায়িকতার নামে অসভ্যতা ছাড়া কিছু নয়।”
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জল দৃষ্টান্ত। হিন্দুরা সংখ্যালঘু হলেও তাদের ধর্মীয় কর্মকান্ডে বাধা দেয়ার অধিকার কারও নেই এবং সেই রকম ইতিহাসও নেই। বরং ধর্মপ্রাণ মুসলীম যুবকরা রাত জেগে মন্দির পাহারা দেয়ার নজির স্থাপন করেছে।
কিন্তু কোন উৎসবের নামে প্রকাশ্য নারীদের টার্গেট করে গায়ে হাত দেয়া, নিপিড়ণ করার দৃষ্টান্ত এই প্রথম। এ নির্লজ্জ ঘটনায় মানুষ চরম বিক্ষুদ্ধ।
বখাটেদের হাত থেকে এক নারীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছেন একজন |
ফেসবুকে আরাফাত নামে একজন লিখেছেন, ”হিন্দুদের হোলি উৎসব নিয়ে আমাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু উৎসবকে পুঁজি করে এই নোংরামি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে এবং তা এখন থেকেই।”
কারও ধর্মীয় উৎসব নিয়ে প্রশ্ন উঠুক তা কেউ চায়না। কিন্তু এ ধারা অব্যাহত থাকলে মানুষের ক্ষুব্ধ মনোভাব প্রতিক্রিয়ায় রুপ নিয়ে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে। যা কারো জন্যই শুভ হবেনা।
সুতরাং উৎসবের নামে যারা এই নোংরামির জন্ম দিয়েছে তাদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে। একই সাথে ভবিষ্যতে যে কোন অনুষ্ঠানকে নোংরামি ও অসভ্যতা থেকে মুক্ত রাখতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কারও ধর্মীয় উৎসব নিয়ে প্রশ্ন উঠুক তা কেউ চায়না। কিন্তু এ ধারা অব্যাহত থাকলে মানুষের ক্ষুব্ধ মনোভাব প্রতিক্রিয়ায় রুপ নিয়ে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে। যা কারো জন্যই শুভ হবেনা।
সুতরাং উৎসবের নামে যারা এই নোংরামির জন্ম দিয়েছে তাদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে। একই সাথে ভবিষ্যতে যে কোন অনুষ্ঠানকে নোংরামি ও অসভ্যতা থেকে মুক্ত রাখতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
হোলি খেলায় নোংরামি, অসাম্প্রদায়িকতার নামে অসভ্যতা
Reviewed by সম্পাদক
on
March 15, 2017
Rating:
No comments: